২৫ বছর পর বাড়ি ফিরলো নিখোঁজ যুবক : আনন্দে সামিল প্রতিবেশীরাও

20th February 2021 7:32 pm বর্ধমান
২৫ বছর পর বাড়ি ফিরলো নিখোঁজ যুবক : আনন্দে সামিল প্রতিবেশীরাও


নিজস্ব সংবাদদাতা ( পঃ বর্ধমান ) :  ২৫ বছর পর নিজের বাড়ি ফিরলো বছর বিয়াল্লিশের অদ্বৈত বাউরী। বুদবুদের কোটা গ্রামের বাসিন্দা অদ্বৈত বাউরী গত ২৫ বছর আগে এলাকারই এক মহিলার সাথে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজে কলকাতার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেন। কয়েক মাস সেখানে কাজ করার পর পরিবারের সদস্যরা খবর পান অদ্বৈত বাউরী কাজের জায়গা থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে গেছেন।  বছরের-পর-বছর পরিবারের সদস্যরা বিভিন্ন এলাকায় তার খোঁজ চালিয়েছিলেন।  অবশেষে পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পেরেছিলেন যে অদ্বৈত আর বেঁচে নেই।  তাকে মৃত বলেই মনে করত পরিবারের সদস্যরা ও অদ্বৈতের মা-বাবা।  এরপর কেটে যায় ২৫ টা বছর। শুক্রবার হঠাৎই অদ্বৈত কে পানাগড়ে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়।  এলাকার কয়েকজন তাকে দেখে চিনতে পারে।  আদৌ ওই ব্যক্তি অদ্বৈত কিনা তা নিশ্চিত করতে মোবাইলে ছবি তুলে অদ্বৈতের পরিবারের সদস্যদের পাঠানো হলে, পরিবারের সদস্যরা চিনতে পেরে তাকে বাড়ি নিয়ে আসে। বাড়ি ফিরে তার দাদাকে অদ্বৈত জানায় তাকে পাড়ার এক মহিলা রাজমিস্ত্রি জোগাড়ের কাজের জন্য কোলকাতায় নিয়ে গেছিল। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর তাকে কিছুদিন কোলকাতায় কাজ করানোর পর তাকে পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে তাকে কাজের জন্য নিয়ে যাওয়া হতো।  দিনের শেষে পরিশ্রমের পর যে টাকাটি পারিশ্রমিক পেতেন।  সেই টাকা তুলে দিতেন এলাকার ওই মহিলার হাতে। তাকে বলা হত মাসের শেষে তার বাবা-মার কাছে তার পরিশ্রমের টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।  সেই ভেবেই নিশ্চিন্তে কাজ করতেন অদ্বৈত।  কোনভাবেও তাকে বাড়ি আসতে দেওয়া হতো না।
 অবশেষে বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করতে করতে অবশেষে কয়েকজন রাজমিস্ত্রির সহযোগিতায় ২৫ বছর পর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় অদ্বৈত।  নিজের বাড়ি ছেড়ে যাওয়া বছর সতেরোর যুবক বর্তমানে ৪২ বছরের একজন ব্যক্তি।  এই পঁচিশ বছরে বদলে গিয়েছে সমস্ত কিছু।  ২৫ বছর পর কয়েক হাজার টাকা নিয়ে যখন সে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় রাস্তায় সেই টাকা নানান আছিলায় লুট করে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে অদ্বৈত।
 এমনকি পানাগড় স্টেশনে নামার পর নিজের বাড়ির রাস্তা চিনতে না পেরে পানাগড় বাজারের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকে সে। ২৫ বছর পর নিজের ভাইকে পেয়ে খুশি তার দাদা সহ গ্রামের মানুষ।  গ্রামের মানুষ আর অদ্বৈত কে চোখের আড়াল করছেন না।  সব সময় তাকে নজরে রাখছেন সকলেই। ২৫ বছর পরিশ্রম করিয়ে ভাইয়ের পরিশ্রমের টাকা যে মহিলা লুট করেছেন এবং  পরিবারকে মিথ্যা কথা বলে তাকে বাড়ি আসতে দেয়নি।  সেই মহিলার উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়ে একজোট হয়েছেন গ্রামের মানুষ।
 তবে ২৫ বছর ধরে যে বাবা-মার জন্য পরিশ্রম করে বাবা-মার সুখের জন্য পরিশ্রমের টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা করতো অদ্বৈত, বাড়ি ফিরে জানতে পারে ছেলের অপেক্ষা করতে করতে অসুস্থ হয়ে বছর ছয়েক আগেই মারা গিয়েছেন তার বাবা-মা।





Others News

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা

MEMARI . একবছর আগে আবেদন করেও মেলেনি জাতিগত শংসাপত্র : হন‍্যে হয়ে ঘুরছেন মা


প্রদীপ চট্টোপাধ্যায় ( বর্ধমান ) : প্রায় এক বছর আগে আবেদন করেও মেয়ের জাতিগত শংসাপত্র মেলেনি । আবেদনকারীদের জাতি শংসাপত্র দেওয়ার
ক্ষেত্রে দেরি করা যাবেনা বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।কিন্তু বাস্তবে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটে চলেছে।প্রায় এক বছর আগে  চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাওয়ার জন্য নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে  আবেদন করেছিলেন মা।কিন্তু মেয়ে কে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসলেও জাতি  শংসাপত্র আজও না মেলায় কার্যত হতাশ হয়ে পড়েছেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির রাধাকান্তপুর নিবাসী ঊর্মিলা দাস।ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য ঊর্মিলাদেবী বৃহস্পতি বার মেমারি ১ ব্লক বিডিও অফিসে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন। শংসাপত্র পাবার জন্য বিডিও সাহেব কি ব্যবস্থা করেন সেদিকেই এখন তাকিয়ে ঊর্মিলাদেবী। 

বিডিওকে লিখিত আবেদনে ঊর্মিলাদেবী জানিয়েছেন ,তাঁর স্বামী মানিক দাস দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী ।বছর ১০ বয়সী তাঁদের একমাত্র কন্যা গ্রামের বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পাঠরত কালে তাঁর ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য তিনি নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে চলতি বছরের ২৪ জানুয়ারী আবেদন করেছিলেন।  উর্মিলাদেবী বলেন ,তার পর থেকে দীর্ঘ সময় পেরিয়ে  গেলেও তিনি তাঁর মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পান না।মেয়ের পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তির সময় এগিয়ে আসায় গত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে তিনি শংসাপত্রের বিষয়ে মেমারি ১ ব্লকের বিডিও অফিসে খোঁজ নিতে যান।জাতি শংসাপত্র বিষয়ের বায়িত্বে থাকা বিডিও অফিসের আধিকারিক তাঁকে অনলাইনে এই সংক্রান্ত একটি নথি বের করে আনতে বলেন । অনলাইনে সেই নথি বের করেনিয়ে তিনি ফের ওই আধিকারিকের কাছে যান । তা দেখার পর ওই আধিকারিক তাঁকে  ২০ দিন বাদে আসতে বলেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন , তিনি ২৫ দিন বাদে যাবার পর ওই আধিকারিক তাঁকে গোপগন্তার ২ গ্রাম পঞ্চায়েতে গিয়ে খোঁজ নেবার কথা বলেন । তিনি এরপর গ্রামপঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যান । নথি ঘেঁটে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে কোন ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি।ঊর্মিলাদেবী দাবী করেন ,এই ভাবে তিনি একবার বিডিও অফিস , আবার পঞ্চায়েত অফিসে দরবার করে চলেন । কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হয় না। মেয়ের ওবিসি শংসাপত্র পাবার জন্য  গত ১৩ ডিসেম্বর ফের তিনি বিডিও অফিসে যান ।ওই দিনও বিডিও অফিসের জাতি শংসাপত্র বিষয়ক বিভাগের আধিকারিক তাঁকে একই ভাবে পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে যেতে বলে দায় সারেন। পরদিন তিনি পঞ্চায়েত অফিসে খোঁজ নিতে গেলে পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ ফের জানিয়ে দেয় তাঁর মেয়ের নামে  ওবিসি শংসাপত্র পঞ্চায়েতে আসে নি । কেন মেয়ের জাতি শংসাপত্র পাচ্ছেন না সেই বিষয়ে  না পঞ্চায়েত না ব্লক প্রশাসনের কর্তৃপক্ষ কেউই তাঁকে কিছু জানাতে পারেন । ঊর্মিলাদেবী বলেন ,পঞ্চম শ্রেণিতে ভর্তির আগে তার মেয়ে যাতে ওবিসি শংসাপত্র পেয়ে যায় তার ব্যবস্থা করার জন্য এদিন তিনি বিডিওর কাছে লিখিত ভাবে আবেদন জানিয়েছেন । মেমারী ১ ব্লকের বিডিও আলী মহম্মদ ওলি উল্লাহ এদিন বলেন ,“জাতি শংসাপত্র পাবার জন্য হাজার হাজার আবেদন জমা পড়ছে । তবে ঊর্মিলাদেবীর কন্যা দ্রুত যাতে বিবিসি শংসাপত্র দ্রুথ পান সেই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে “। মেমারির বিধায়ক মধুসূদন ভট্টাচার্য্য বলেন,’মেমারি  বিধানসভা এলাকার আবেদনকারীরা দ্রুত যাতে জাতি শংসাপত্র পান সেই বিষয়ে প্রশাসনকে আরও তৎপর হওয়ার কথা বলবো’।